ঢাকাবাসীদের স্বপ্নপুরণঃ মেয়র মোহাম্মদ হানিফ ফ্লাইওভারের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ সড়ক অবকাঠামো মেয়র মোহাম্মদ হানিফ ফ্লাইওভার জনসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে নগরবাসীর বহুদিনের স্বপ্নপুরণ হয়েছে এবং দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থায় নতুন দিগন্তের উন্মোচন হয়েছে। গতকাল বিকেল ৩.৩০ মিনিটে বহুল প্রতীক্ষিত এই ১১.৮ কিলোমিটার লম্বা ফ্লাইওভারটি উদ্বোধন করেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি এটিকে নগরবাসীর জন্য ঈদের উপহার বলে উল্লেখ করেন।
“ঈদুল ফিতরের আগে আমরা কুড়িল ফ্লাইওভার খুলে দিয়েছিলাম, যা ছিল ঈদুল ফিতরের উপহার। আজ আমরা দেশের সর্ববৃহৎ ফ্লাইওভার ‘মেয়র মোহাম্মদ হানিফ ফ্লাইওভার’ এর উদ্বোধন করতে এসেছি এবনফ এটা নগরবাসীর জন্য ঈদুল আযহা’র উপহার।”
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন তাঁর সরকার জনগণের স্বার্থকে গুরুত্ব দেয় যাতে তাদের জীবন-যাপন সহজ হয়। ‘আমরা দিতে এসেছি, নিতে নয়।’ দেশের প্রতিটি এলাকায় উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকার ঢাকাকে একটি বাসযোগ্য শহর হিসেবে গড়ে তুলতে চায় এবং এলক্ষ্যে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। পরনির্ভরশীলতা বাদ দিয়ে দেশকে স্বাবলম্বী করতে সবার প্রতি সরকারকে সহযোগিতা করার আহবান জানান প্রধানমন্ত্রী, ‘আমরা সবসময় অন্যের দয়ায় সামনে এগিয়ে যেতে পারবোনা। আমি বিশ্বাস করি আমরা নিজেদের মেধা ও বিচক্ষনতা দিয়ে দেশকে তৈরী করতে পারবো।’
শেখ হাসিনা বলেন এই ফ্লাইওভারের মাধ্যমে যাত্রাবাড়ি-সায়েদাবাদ-গুলিস্তান-ফুলবাড়ীয়া-পলাশী সড়ক আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত চার লেনের সড়কে পরিণত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, রাজধানীর অন্যতম গূরুত্বপূর্ণ প্রবেশপথে নির্মিত এই ফ্লাইওভারটি যান চলাচল সহজ করতে সহায়ক হবে। তিনি বলেন, ‘এর মাধ্যমে ঢাকাগামি মানুষের ভোগান্তি কমবে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা স্ট্রাটেজিক ট্রান্সপোর্ট প্লানের (এসটিপি) অধীনে রাজধানীকে ট্রাফিক জ্যাম মুক্ত একটি আধুনিক ঢাকা করতে ফ্লাইওভার নির্মাণ, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, আন্ডারগ্রাউন্ড ট্যানেল এবং ঢাকার চারপাশে রিং রোড ও ওয়াটার ওয়েসহ বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছি।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকার জলাবদ্ধতা, নদী ও পরিবেশের দূষণ ও অপরিকল্পিত নগরায়ন দূরীকরণসহ নাগরিক সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধিতে বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করেছে।
এই ফ্লাইওভার দেশের দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলের ৩২টি জেলা ও রাজধানীর মধ্যে সড়ক যোগাযোগ আরো সহজ ও দ্রুততর করবে বলে আশা করা হচ্ছে। তাছাড়া এই ব্যবস্থা সায়দাবাদ, যাত্রাবাড়ী, টিকাটুলি, গুলিস্তান, ফুলবাড়িয়া এলাকায় দীর্ঘদিনের তীব্র যানজট হ্রাসে সহায়ক হবে। মোট ২ হাজার ৩শ’ কোটি টাকা ব্যয়ে দেশের প্রথম সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বমূলক এই প্রকল্প বিল্ড, ওউন, ওপারেট ও ট্রান্সফার (বিওওটি) ভিত্তিতে বাস্তবায়িত হয়। কাজের দায়িত্বপ্রাপ্ত অরিয়ন ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিঃ তার ২৪ বছরের কনসেশন প্রিয়ড শেষে এই ফ্লাইওভারটি সরকারের নিকট হস্তান্তরের কথা রয়েছে বলে সরকারি কর্মকর্তারা জানান। ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের তত্ত্বাবধানে ২০১০ সালে এই ফ্লাইওভারের কাজ শুরু হয়। ঐ বছরের ২২ জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।